বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্যাটাগরির ওয়েবসাইট তৈরি করে এবার রেকর্ড গড়লেন আলম কিবরিয়া নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক তরুণ। তার তৈরিকৃত সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি ক্যাটাগরির ওয়েবসাইট ‘আমার গ্রাম’কে [www.amargram.xyz] বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্যাটাগরির ওয়েবসাইটের স্বীকৃতি দিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ।
রোববার (০৪ অক্টোবর) গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতিপত্র হাতে পৌঁছায় কিবরিয়ার। বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামের তথ্য এক ঠিকানায় নিয়ে আসতেই এই ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন কিবরিয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গাজীকান্দি গ্রামের হীরণ মোল্লার ছেলে আলম কিবরিয়া সাত ভাই-বোনের মধ্যে ষষ্ঠ। বাবা পেশায় কৃষিজীবী। মা খাদিজা বেগম গৃহিণী।
২০১৬ সালে উপজেলার বীরগাঁও কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন কিবরিয়া। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং করার জন্য ঢাকায় চলে যান।
কোচিংয়ের ফাঁকে কয়েক মাস একটি আইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ওয়েব ডেভেলপিংয়ের কাজ শেখেন কিবরিয়া। তথ্যপ্রযুক্তির প্রতি আকর্ষণ থেকেই নিজ নাম গিনেস বুকে তোলার ইচ্ছা জাগে তার। তাই করো;নাভাই;রাস মহামারিকালে ঘরে শুয়ে-বসে সময় নষ্ট না করে ‘আমার গ্রাম’ ওয়েবসাইট তৈরির কাজে হাত দেন। পরিকল্পনা ছিল, বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামের নামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য ও ফোন নম্বর এক ঠিকানায় নিয়ে আসা।
সেই থেকেই সর্ববৃহৎ ক্যাটাগরির ওয়েবসাইট বানানোর কাজ শুরুর করেন কিবরিয়া। টানা কয়েক মাস প্রতিদিন ১০-১২ ঘণ্টা সময় ওয়েবসাইট তৈরির কাজে ব্যয় করেন তিনি।
এ বিষয়ে কিবরিয়া বলেন, ওয়েবসাইটের ডোমেইন কিনে নিজেই ডিজাইন ও ডেভেলপিংয়ের কাজ করেছি। পরিবারের কেউ জানত না আমি সারাদিন ঘরে বসে কী কাজ করছি বা কী তৈরি করছি। কারণ আমার পরিবারের কারও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না। করোনাভাইরাসের সময় ঘরেই ছিলাম। কিন্তু ঘরে শুয়ে-বসে সময় নষ্ট না করে ওয়েবসাইটের কাজ করেছি। বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ও সরকারি ওয়েবসাইট এবং গুগল ও উইকিপিডিয়া থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়েছে আমাকে।
তিনি বলেন, আমার ওয়েবসাইটটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্যাটাগরির। পাঁচ হাজার ৫৬৬টি ক্যাটাগরি যুক্ত করা হয়েছে এই সাইটে। এটায় প্রবেশ করলেই বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মানচিত্র দেখা যাবে। মানচিত্র অনুযায়ী জেলায় ক্লিক করলেও ওই জেলার সব উপজেলা ও ইউনিয়ন এবং গ্রামের নামসহ প্রয়োজনী তথ্য চলে আসবে। আপাতত ৬৮ হাজার গ্রামের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছি। গ্রামের তথ্যগুলো হালনাগাদের কাজ চলছে। যে কেউ চাইলে সাইটে গিয়ে তার নিজ গ্রামের তথ্য হালনাগাদ করতে পারবেন।
‘২০ সেপ্টেম্বর পাঁচ মার্কিন ডলার খরচ করে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করি এটিকে সবচেয়ে বেশি ক্যাটাগরির ওয়েবসাইটের স্বীকৃতি দিতে। গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ আমার আবেদন যাচাই-বাছাই করার পর স্বীকৃতি দেয়। রোববার (০৪ অক্টোবর) তাদের স্বীকৃতিপত্র হাতে পেয়েছি আমি’ উল্লেখ করেন কিবরিয়া।
তিনি বলেন, এখন ওয়েবসাইটের নিরাপত্তার দিকটি আরও গুরুত্ব দিচ্ছি। সবাই যখন তাদের প্রয়োজনে আমার বানানো ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিতে পারবেন তখনই নিজেকে স্বার্থক মনে হবে।
এর আগে সেফটিপিন দিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম চেইন বানিয়ে গিনেস বুকে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক গ্রামের প্রয়াত জগদীশ চন্দ্র দেবের ছেলে পার্থ চন্দ্র দেব।
ওই চেইন দুই হাজার ৪০১ দশমিক ৮৩ মিটার বা সাত হাজার ৮৮০ ফুট শূন্য দশমিক ২ ইঞ্চি আয়তনের। গত ১৭ সেপ্টেম্বর পার্থের কাছে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের দেয়া স্বীকৃতিপত্র এসে পৌঁছায়।